কখনো কি ভেবেছেন, মাত্র ২১৫ টাকায় বিদেশ যাত্রা করা যায়? আমাদের আজকের ভিডিওতে আমরা দেখাবো, কিভাবে আপনি মাত্র ২১৫ টাকায় ঢাকা থেকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলা শহরে পৌঁছাবেন।
বিশ্বাস
হচ্ছে না? আপনাদের ঢাকা
থেকে আগরতলা যাওয়ার পুরো প্রক্রিয়াটি সরেজমিন
ভিডিওর মাধ্যমে দেখাবো। সাথেই থাকুন। ফিরছি ইনট্রোর পর।
বন্ধুরা, আমাদের
যাত্রা শুরু হল ঢাকার বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে। সকাল সাড়ে নয় টা বাজছে। আমরা মহানগর
প্রভাতীর জন্য অপেক্ষা করছি। আমাদের ট্রেন সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে কমলাপুর থেকে ছেড়েছে।
এই যে আমাদের ট্রেন চলে এসেছে।
আজ ট্রেনে অনেক ভিড়। সকাল
৮টা ৩০ মিনিটে বিমানবন্দর স্টেশন থেকে আমাদের ট্রেনটি
ছেড়েছে।
রেলপথে
ঢাকার বিমানবন্দর থেকে আখাউড়া রেল
স্টেশনের দূরত্ব ৮৩ কিলোমিটারের মত।
এই পথ পাড়ি দিতে
সময় লাগবে দুই ঘন্টার কিছুটা
বেশি। ট্রেনে ঢাকা থেকে আখাউড়া
শোভন চেয়ার এর ভাড়া ১৬০
টাকা।
১০ টা ৪০ মিনিটে
আমাদের ট্রেন আখাউড়া এসে পৌঁছেছে। মানে
আমাদের সময় লেগেছে মাত্র
দুই ঘন্টা ১০ মিনিট।
ট্রেন
থেকে নেমে চারপাশটা একটু
দেখে নিলাম। আখাউড়া রেল জংশন বাংলাদেশের
অন্যতম গুরুত্বপূর্ন একটি রেল জংশন।
স্টেশনের বাইরে বের হলেই আশেপাশের
এলাকাগুলোতে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন পেয়ে যাবেন। এখান
থেকে মোটরাইজড রিক্সা, অটোরিক্সা কিংবা সিএনজি যেকোন বাহনে করে আখাউড়া স্থলবন্দর
যেতে পারেন।
এখান
থেকে বর্ডার পর্যন্ত অটোরিক্সার ভাড়া পড়বে জনপ্রতি
৩০ টাকা।
রেলস্টেশন
থেকে স্থলবন্দরের রাস্তাটি ভীষণ সুন্দর। রাস্তার
দুপাশেই চমৎকার গাছগাছালি আর ফসলের মাঠ
দেখা যায়। এই এলাকাটি
ঐতিহাসিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ন। ১৯৭১
সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন অগনিত মুক্তিযোদ্ধা এই পথে আগরতলা
এসে যুদ্ধের প্রশিক্ষন নিয়েছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধের
কথা ভাবতে ভাবতে আর প্রাকৃতিক দৃশ্য
দেখতে দেখতে ১৫-২০ মিনিটের
মধ্যেই বর্ডারে পৌঁছে গেলাম।
বর্ডারে
পৌঁছে প্রথমেই যে কাজটি করতে
হবে সেটি হলো, ট্রাভেল
ট্যাক্স পরিশোধ করা। এই যে
সোনালী ব্যাংক দেখছেন, এখানেই ট্রাভেল ট্যাক্স পরিশোধ করতে পারেন। যদি
ঢাকা থেকে ট্রাভেল ট্যাক্স
দিয়ে আসেন, তবে সোজা চলে
যান পাশের রুমের কাস্টমস কাউন্টারে।
আজ অনেক মানুষের ভিড়
এখানে। ঈদের একদিন পরে
এসেছি। একারনেই হয়ত বা এত
ভিড়।
টুরিস্টদের
অতিরিক্ত ভিড়ের কারনে ইমিগ্রেশন অফিসাররাও পরিস্থিতি সামলাতে হিমসিম খেয়ে গিয়েছিলেন।
আগরতলা
অংশের ইমিগ্রেশন অফিসটি অনেক সুন্দর। সত্যি
কথা বলতে, বাংলাদেশের সাথে ভারতের যতগুলো
ল্যান্ড পোর্ট আছে তার মধ্যে
সবচেয়ে সুন্দর পোর্ট মনে হয়েছে আগরতলা
পোর্টটিকে। ভেতরের চমৎকার সিকিউরিটি চেক পোস্ট, লাগেজ
স্ক্যানার এবং ইমিগ্রেশন কাউন্টারগুলো
দেখে কিছুটা এয়ারপোর্টের ফ্লেভার পাওয়া যায়।
বাংলাদেশের
অংশের ইমিগ্রেশনে অনেক সময় লাগলেও
ভারতীয় অংশে খুব বেশি
সময় লাগেনি।
দুপুর
১ টার মধ্যে ভারতীয়
ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গেল।
পোর্ট
থেকে শেয়ারে একটি রিক্সায় চড়ে
আগরতলা শহরের কেন্দ্রবিন্দু পোস্ট অফিসের মোড়ে যাচ্ছি। আমার
ভাগে ভাড়া পড়েছে মাত্র
২০ রুপি অর্থাৎ ২৫
টাকা। সেখানে বিগ বাজারের নীচে
এক বন্ধু অপেক্ষা করছে।
তো বন্ধুরা, এবার একটু খরচের
হিসেবটা মিলিয়ে নিন। ঢাকা থেকে
আখাউড়া ১৬০ টাকা, আখাউড়া
থেকে পোর্ট ৩০ টাকা এবং
আগরতলা পোর্ট থেকে বিগ বাজার
২৫ টাকা। সব মিলিয়ে ২১৫
টাকা।
আবারো
বলছি মাত্র ২১৫ টাকা। এটাই
সত্যি। এটাই সম্ভব।
তো বন্ধুরা এই ছিলো আমাদের
২১৫ টাকায় বিদেশ ভ্রমণের গল্প। সবাই ভালো থাকবেন।
আবারো দেখা হবে নতুন
কোন ট্রাভেল ডেস্টিনেশনে।